টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি:
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় দূষিত পানি পান করে প্রতিদিনই গড়ে ৭০ থেকে ৮০ জন রোগী চিকিৎসা নিতে আসছে টুঙ্গিপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ডায়রিয়া, আমাশয়, জন্ডিস ও টাইফয়েডের মতো পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে অসংখ্য মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার পানির প্রধান উৎস বাঘিয়ার নদী। অথচ নদীর ঠিক বিপরীত পাশে রয়েছে শেখ মানিমিয়ার গরুর খামার। খামার থেকে প্রতিদিন গরুর গোবর, মলমূত্র ও অন্যান্য বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এর ফলে নদীর পানি মারাত্মকভাবে দূষিত হয়ে পড়েছে। সেই দূষিত পানি পরিশোধন করে পৌরবাসীর বাড়িতে পৌঁছে যাচ্ছে।
টুঙ্গিপাড়া পৌরসভায় বর্তমানে প্রায় ২,৪০০ জন গ্রাহক রয়েছে, আর এই পানির মাধ্যমে ১২ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রতিদিনের চাহিদা পূরণ করেন। এতে সাধারণ মানুষ মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছেন।
এ বিষয়ে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শাহিনুর জামান বলেন, পানি দূষনের বিষয়ে আমার কাছে কোন তথ্য ছিল না। আপনাদের তথ্যের মাধ্যমে আমি জানতে পারলাম যে আমার পাম্পের বিপরীতে বর্জ্য ফেলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে আমি আমার অফিস স্টাফ পাঠিয়ে তদন্ত করে অতিসত্বর প্রশাসন মহোদয়ের দৃষ্টিগোচর করব।এবং আইনগত যা যা ব্যবস্থা নেওয়া যায় সেভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করব।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ তানভীর আহমেদ বলেন, গরুর খামারের বর্জ্য পাবলিক হেল্থের জন্য বড় হুমকি কারণ এই দূষিত পানি বিশুদ্ধকরণ করা হলেও এর ভিতরে কিছুটা গন্ধ বা ব্যাড স্মাইল থাকবে, হাসপাতালে ভর্তি থেকে আমরা আউটডোরে পানিবাহিত রোগের রোগী বেশি পাচ্ছি। আমরা প্রতিদিন এভারেজে ৭০ থেকে ৮০ জন রোগী চিকিৎসা দিচ্ছি যেসমস্ত রোগ পানি ব্যবহার বা পান করে হচ্ছে। এখনে আরো একটা কারণও আছে কিছু রোগী আসছে পৌরসভার বাইরে থেকে বর্ষাকালের শেষের দিকে পানি নেমে যাচ্ছে বিভিন্ন জায়গায় পচনশীল যেমন, পাট বা কচুরিপানা অন্যান্য শ্যাওলা জাতীয় উদ্ভিদ পচে পানি দূষিত করছে। তিনি আরো বলেন হাসপাতালে যাদেরকে ভর্তি করছি ৮ থেকে ১০ জন পানি বাহিত রোগে ভর্তি হয় এভারেজে।
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন, খামার থেকে বর্জ্য অপসারণের সুষ্ঠু ব্যবস্থা ও পৌরসভার পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় আধুনিক ফিল্টার যুক্ত করা এখন সময়ের দাবি। না হলে টুঙ্গিপাড়ার মানুষকে দীর্ঘদিন ভোগান্তিতে থাকতে হবে।