নিজস্ব প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার গিমাডাঙ্গা মুন্সির চর গ্রামের ছোট্ট একটি ঘরে প্রতিদিন সন্ধ্যা নামে নীরব কান্নায়। মাত্র দুই বছরও হয়নি যে শিশুটি পৃথিবীতে এসেছে, কিন্তু সে ইতিমধ্যেই বুঝে গেছে—বাবা আর ফিরে আসবেন না।
গত বছরের ১১ মে নিখোঁজ হন মো. আরমান শেখ। পরদিন শ্মশানঘাটের পাশে নদী থেকে উদ্ধার হয় তাঁর নিথর দেহ। মাত্র ২৯ বছরের এই তরুণ ছিলেন পরিবারের প্রধান ভরসা—বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী, ছোট ভাইবোন আর কোলে দুধের শিশুসন্তান নিয়ে ৬ সদস্যের সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী। তাঁর মৃত্যু সেই সংসারে এনে দিয়েছে শোকের সঙ্গে তীব্র অভাব।
নিহতের বাবা, স্থানীয় সাংবাদিক মো. তপু শেখ বলেন,
“আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। প্রায় এক বছর হয়ে গেলেও বিচার পাইনি। সংসার চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে গেছে। কারও কাছ থেকে সঠিক সহায়তাও পাইনি।”
তাঁর কণ্ঠে ক্ষোভের চেয়ে গভীর হতাশা—এমন এক অনুভূতি, যা দীর্ঘদিনের অপেক্ষা আর অবহেলার ফল।
এদিকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) জানিয়েছে, মামলা এখনো তদন্তাধীন। কিন্তু সময় যতই গড়াচ্ছে, ততই বাড়ছে নিহতের পরিবারের অনিশ্চয়তা।
টুঙ্গিপাড়ার এই ছোট্ট শিশুটি হয়তো এখনও জানে না আইন, ন্যায়বিচার বা আদালত কী—কিন্তু সে প্রতিদিন মায়ের চোখের জল দেখে বড় হচ্ছে। তার প্রথম জন্মদিন কেটেছে বাবার ছবি দেখে, আর দ্বিতীয় জন্মদিনও হয়তো কাটবে একইভাবে।