টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
উপজেলার কুশলি ইউনিয়নের ৬৯ নং বাসুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ২য় তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণে এ অনিয়মের অভিযোগ করেছেন শিক্ষক ও এলাকাবাসী।
তাদের অভিযোগ, বিদ্যালয়টির ভবন নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের ইট, বালু ও খোয়া। যার ফলে ভবনের স্থায়িত্ব নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। প্লাস্টারের নিম্নমানের বালু ব্যবহার করায় প্লাসটারের ফিনিশিং হয়নি। আর প্লাসটারের স্থায়ীত্ব কমে গেছে। কক্ষের ফ্লোর উঁচুনিচু। মেহগনি বা ভালো গাছের কাঠের দরজা করার কথা থাকলেও জ্বালানি কাঠের দরজা ব্যবহার করা হয়েছে। গ্রিল ও রেলিং বাঁকা ত্যাড়া করে লাগিয়ে সম্পূর্ণ করা হয়েছে। প্যাটার্ন স্টোন ঢালাই দেওয়া হয়নি।
এছাড়া সিসি ঢালাই ও ব্যাজ ঢালাই কম দেয়া হয়েছে টাকা বাচানোর জন্য। নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হয়েছে যা ভবনের স্থায়িত্ব কমে যাওয়ার প্রধান কারণ।
উপজেলা এলজিইডি অফিস সুত্রে জানা যায়, উপজেলার কুশলী ইউনিয়নের ৬৯ নং বাসুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণে ব্যায় ধরা হয়েছে ৭৮ লক্ষ ৫৪ হাজার ৫১৪ টাকা। মেসার্স মোহাম্মদ ইউনুস এন্ড ব্রাদার্সের ঠিকাদারি সনদে কাজটি করছেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গিমাডাঙ্গা গ্রামের টুটুল শেখ নামের এক ঠিকাদার। আর ঠিকাদার টুটুল শেখের পক্ষ থেকে কাজটি তদারকি করছেন তার চাচাতো তাই জোনায়েদ শেখ।
স্থানীয় মুরুব্বি আসাদ শেখ বলেন, ভবনে পর্যাপ্ত কিউরিং করা হয়নি। যেখানে রড ভালো ব্র্যান্ডের ব্যবহার করার কথা ছিল সেখানে নিন্মমানের রড ব্যবহার করা হয়েছে। জালানা, দরজা, গ্রীল ব্যাকাত্যাড়া করে লাগিয়ে ভবনের সৌন্দর্য নষ্ট করছে। আর বিল পাওয়ার আশায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নামমাত্র কাজ করে ভবনটি দাড় করিয়েছে। তবে এই ভবন কতদিন থাকবে সেটা নিয়ে আমাদের সন্দেহ রয়েছে।
বাসুড়িয়া এলাকার ইয়াদ আলী শেখ বলেন, তারা বলেন, এই ভবনটি নির্মাণ যদি এভাবেই শেষ হয়, তবে কয়েক বছরের মধ্যে এটি বিপজ্জনক হয়ে উঠবে। সরকারের টাকা আর শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি থাকবে। তাই ভবনটির কাজ সঠিকভাবে করার দাবি জানাই।
ঐ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরষিত চন্দ্র বালা অভিযোগ করে বলেন, তাড়াহুড়ো করে কাজ করতে গিয়ে, কাজে ব্যাপক অনিয়ম করেছে। কোন কাজই ঠিকঠাক মত করেনি। ভবনটি আরও তিন মাস আগে আমাদেরকে হস্তান্তর করার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হস্তান্তর করেনি। যার কারনে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া করাতে অনেক সমস্যা পোহাতে হয়েছে। আমাদের দাবি কাজটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হোক।
এবিষয়ে ঐ কাজের ঠিকাদার টুটুল শেখকে মুঠোফোনে কল দিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিলে তিনি বলেন“আমি গাড়িতে আছি। গাড়ি থেকে নেমে কল ব্যাক করছি। কিন্তু তিনি আর কল দেননি। পরে আবার তাকে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের
(এলজিইডি) প্রকৌশলী মোঃ আনিচুর রহমান বলেন, এলাকাবাসী ও শিক্ষকদের অভিযোগ পেয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বারবার বলার পরও তারা আমাদের নির্দেশনা মানছে না। আমি চেষ্টা করব যাতে কাজটা সঠিকভাবে করা হয়।