নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধসে পড়ার ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ শিল্প দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়। এই দুর্ঘটনায় ১,১৩৬ জন শ্রমিক প্রাণ হারান এবং ২,৫০০ জনেরও বেশি আহত হন। দুর্ঘটনার পরপরই আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পর্যায়ে ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়।
রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ও অন্যান্য সংস্থার সহায়তায় একটি ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করা হয়, যার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক ও তাদের পরিবারকে প্রায় ৩০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হয়। ব্রিটিশ রিটেইলার প্রাইমার্ক একাই প্রায় ১২ মিলিয়ন ডলার প্রদান করে। এছাড়াও, বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) আহত শ্রমিকদের চিকিৎসা সহায়তা ও মৃত শ্রমিকদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে।
তবে অনেক শ্রমিক ও তাদের পরিবার অভিযোগ করেছেন যে, তারা প্রতিশ্রুত ক্ষতিপূরণ সম্পূর্ণভাবে পাননি। অনেকেই শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে ৬০,০০০ টাকা পেয়েছেন, যা তাদের দীর্ঘমেয়াদি চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট নয়। বহু শ্রমিক এখনও পুনর্বাসনের জন্য অপেক্ষা করছেন এবং তাদের জীবিকা নির্বাহে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
বর্তমান পরিস্থিতিদুর্ঘটনার এক দশক পরেও অনেক শ্রমিক ও তাদের পরিবার ন্যায়বিচার ও পূর্ণ ক্ষতিপূরণের জন্য অপেক্ষা করছেন। তারা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ, এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে আসছেন।
এই দুর্ঘটনা বাংলাদেশের গার্মেন্ট শিল্পের নিরাপত্তা ও শ্রমিক অধিকার নিয়ে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বৃদ্ধি করেছে। তবে এখনও অনেক কাজ বাকি রয়েছে যাতে শ্রমিকরা নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ পরিবেশে কাজ করতে পারেন।